রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ৩৩ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে র্যাগিং, সিট বাণিজ্য, সহপাঠীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, নেশাদ্রব্য সেবন, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং বিভিন্ন অসদাচরণ উল্লেখযোগ্য। শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সুপারিশে উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সিন্ডিকেট সভায় তা অনুমোদন দেওয়া হয়।
শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম, পরিচয় এবং শাস্তি
১. স্থায়ী বহিষ্কার (৬ জন)
মুস্তাফিজুর রহমান বাবু: নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি।
আসাদুল্লাহ-আল-গালিব: নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
গোলাম কিবরিয়া: ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
ফয়সাল আহমেদ রুনু: ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
জয়ন্ত কুমার রায়: গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী।
মো. মিশকাত হাসান: হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
২. দুই বছরের জন্য বহিষ্কার (৫ জন)
মো. শামীম রেজা: সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।
মো. আব্দুল্লাহ আত তাসরীফ: সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।
মিনহাজুল ইসলাম: সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।
মুজাহিদ আল হাসান: সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।
আরিফুল ইসলাম: আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী।
৩. এক বছরের জন্য বহিষ্কার (৪ জন)
আলফি শাহরিন আরিয়ানা: সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।
জারিফা আহনাফ ইলমা: সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।
মো. আহসানুল হক মিলন: প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী।
কিশোর পাল: দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী।
৪. এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার (২ জন)
৫. ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার এবং জরিমানা (১ জন)
৬. পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা (১ জন)
৭. আবাসিকতা বাতিল (১৪ জন)
তাজরীন আহমেদ খান মেধা: আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।
আশা খাতুন: চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষার্থী।
নবনীতা বিশ্বাস: ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।
নুসরাত জাহান পাপড়ি: ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী।
নূর-ই-জান্নাত কথা: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।
ফারিনা জামান মীম: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।
লিমা খাতুন: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী।
বাবলী আক্তার: সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী।
জাফরিন খান প্রিয়া: নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
বাবলী ইসলাম নিঝুম: চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী।
রাইতাহ ইসলাম: লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী।
কাজী উর্বী ইয়াসমিন রূপ: সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী।
আফ্রিদা বিনতে ইকবাল: ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী।
আশা খাতুন: চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষার্থী।
৮. মুচলেকার মাধ্যমে হলে থাকার সুযোগ (৫ জন)
শামীমা ইয়াসমিন জীবন: ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী।
নাছরিন আক্তার নেহা: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী।
তানজিনা আক্তার: ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী।
মোছা. হুমায়রা আক্তার: চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষার্থী।
মোছা. তামান্না তাসনীম অরিত্রা: চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী।
৯. অধিকতর তদন্তের জন্য অপেক্ষমান (৫ জন)
বাবলী আক্তার: সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী।
জাফরিন খান প্রিয়া: নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
বাবলী ইসলাম নিঝুম: চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী।
রাইতাহ ইসলাম: লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী।
কিশোর পাল: দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ
র্যাগিং ও বৈষম্যমূলক আচরণ।
হলে সিট বাণিজ্য এবং জোরপূর্বক স্লোগান দেওয়া।
শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
নেশাদ্রব্য সেবন।
শিক্ষার্থীদের জিনিসপত্র চুরি ও ব্ল্যাকমেইল।
রাতে শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করা।
বিশেষ পর্যবেক্ষণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, এ ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। অভিযোগ তদন্তে আরও স্বচ্ছতা এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।