• 23 Jan, 2025

মাহফিলে পুলিশের উপস্থিতি, পালালেন মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী

মাহফিলে পুলিশের উপস্থিতি, পালালেন মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে অনুমতিহীন মাহফিলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শনিবার রাতে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভক্তদের সহায়তায় মাহফিল থেকে পালিয়ে যান মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী। এ ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন এবং ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। মাহফিলের অনুমতি না থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে অনুমতিহীন এক মাহফিলে পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তেজনা তৈরি হলে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। বিতর্কিত ইসলামি বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী গ্রেপ্তার এড়াতে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার নাজিরাবাড়ী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

বিজয়নগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রওশন আলী জানান, “নাজিরাবাড়ী গ্রামে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত নামে একটি স্থানীয় সংগঠনের আয়োজনে মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। তবে মাহফিলের কোনো অনুমতি ছিল না। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মাহফিলের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর ভক্তরা পুলিশের কাজে বাধা দেয় এবং পুলিশের ব্যবহৃত তিনটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। উত্তেজনার মধ্যে তাহেরী পাশের একটি বাড়িতে লুকিয়ে পড়েন এবং পরে বাড়ির পেছনের বিল দিয়ে পালিয়ে যান।"

পুলিশের ওপর হামলা এবং আহতরা

ওসি রওশন আলী আরও জানান, পুলিশের ওপর হামলায় ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের মধ্যে এসআই ফারুক আহমেদ ও এএসআই প্রদীপ দাস গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় এবং সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করায় ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন- চর ইসলামপুর মধ্যপাড়ার মন মিয়ার ছেলে ওমর আলী (২৯), একই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে হাকিম মিয়া (৩৭), মৃত আব্দুল কাশেমের ছেলে সেলিম মিয়া (২৪), নাজিরাবাড়ীর রমজান মিয়ার ছেলে শাহানুর (৩৫), মৃত তোতা মিয়ার ছেলে মিজান মিয়া এবং ছতরপুর গ্রামের সেন্ট মিয়ার ছেলে মোশাররফ মিয়া।

পূর্বের হামলার প্রেক্ষাপট

এর আগে ১২ ডিসেম্বর আখাউড়ার একটি মাহফিলে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় আখাউড়া থানায় দায়ের করা মামলায় মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। বিজয়নগরের মাহফিলে পুলিশের উপস্থিতির পেছনে এই মামলার গুরুত্ব ছিল।

স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য

বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, “নাজিরাবাড়ী মাহফিলটি অনুমতিহীন ছিল। পুলিশ সেখানে গেলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতা উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং পুলিশের কাজে বাধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের আদালতে পাঠানো হবে।"

গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর পালানোর ঘটনা

উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর ভক্তরা তাকে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি ছদ্মবেশে বাড়ির পেছনের বিল দিয়ে পালিয়ে যান বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের উপস্থিতিকে সঠিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, অনুমতি ছাড়াই এ ধরনের জনসমাবেশ করা অনুচিত। তবে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪