• 23 Jan, 2025

জুরাইনে রেললাইন অবরোধ: চার ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

জুরাইনে রেললাইন অবরোধ: চার ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

জুরাইনে রেললাইন অবরোধের ঘটনায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে ট্রেন চলাচল। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা সড়কে চলাচলের অনুমতির দাবিতে রেললাইন অবরোধ করলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলেও বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং এর সঙ্গে যুক্ত মানুষের জীবিকার প্রশ্ন

ঢাকার জুরাইন রেলক্রসিংয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধের কারণে প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আজ শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য রুটে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে। আজ বেলা ১১টার দিকে রিকশাচালকেরা রেললাইন অবরোধ করেন। তাদের দাবি ছিল রাজধানীর সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি। কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ এবং পদ্মা সেতু হয়ে রাজশাহী ও খুলনার ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বেলা দেড়টার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বেলা তিনটা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ সূত্র জানায়, প্রায় দুই শতাধিক রিকশাচালক জুরাইন রেলক্রসিংয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা রেললাইনের প্রতিবন্ধক নামিয়ে দেয়, যার ফলে আশপাশের সড়কগুলোতেও তীব্র যানজট তৈরি হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যাওয়ার অনুরোধ জানালেও তারা অনড় থাকে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের কারণে বেশ কয়েকজন আহত হন বলে জানা গেছে।

শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে। বেলা দেড়টার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবারও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা সড়ক অবরোধ করেন। মহাখালীতে পুলিশের সঙ্গে চালকদের সংঘর্ষ হয় এবং বেশ কিছু ভবন ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট তিন দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেয়। নির্দেশনার পেছনে কারণ হিসেবে যানবাহনের কাঠামোগত ত্রুটি এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. হাদীউজ্জামান বলেন, এসব যানবাহন যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ হলেও হুট করে বন্ধ করা কঠিন। তিনি এসব যানবাহনের কারিগরি উন্নয়ন এবং পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেন। 

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এবং অন্যান্য সংস্থার হিসাবে, দেশে ব্যাটারি ও যন্ত্রচালিত তিন চাকার যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে প্রায় ১০ লাখ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাটারিচালিত রিকশার একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে যানজট এবং নিরাপত্তা ইস্যু আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪