• 23 Jan, 2025

ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের কড়া নির্দেশ

ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের কড়া নির্দেশ

ঢাকার মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অবৈধ এসব রিকশা দুর্ঘটনা ও যানজটের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে রুল জারি করেছেন। রাজধানীতে প্রায় ১২ লাখ রিকশার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশার আধিক্য সবচেয়ে বেশি।

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের জন্য হাইকোর্ট তিন দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সানজিদ সিদ্দিকী ও তাহসিনা মৃদু। আদেশ অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিটি করপোরেশন মেয়র, বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।রাজধানীতে বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রিকশা চলাচল করছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশই ব্যাটারিচালিত। পুরাতন প্যাডেলচালিত রিকশায় ব্যাটারি স্থাপন করে সেগুলো যান্ত্রিক রূপ দেওয়া হচ্ছে। এসব রিকশা চলাচলের কারণে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে রাতের বেলা এসব রিকশা মূল সড়কে চলাচল করে, যা যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার দাপট সবচেয়ে বেশি। মানিকনগর, খিলগাঁও, বাসাবো, রামপুরা, বাড্ডা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, উত্তরা, দক্ষিণখান, ময়নারটেকসহ বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের রিকশা ব্যাপকভাবে দেখা যায়। এগুলো কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই চলছে। এমনকি কিছু জায়গায় দেখা যায়, প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা পরিচালিত হচ্ছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছে। কিছু ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করা হলেও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় রিকশাগুলো আবারো চালু হয়েছে। ফলে এ ধরনের যানবাহনের দৌরাত্ম্য কমেনি।


হাইকোর্টের নির্দেশনা কার্যকর করতে গেলে সিটি করপোরেশন ও পুলিশের সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করলেই সমাধান হবে না; বরং বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করলে হাজারো চালক বেকার হয়ে পড়বে, যা সামাজিক সমস্যার জন্ম দিতে পারে। ঢাকার বাসিন্দারা হাইকোর্টের আদেশকে স্বাগত জানালেও কার্যকর বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে এসব রিকশা চলাচল করছে। যদি আদেশ বাস্তবায়ন করা হয়, তবে যানজট ও দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে।হাইকোর্টের এই নির্দেশ কার্যকর হলে ঢাকার রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রশাসনিক উদ্যোগ ও কঠোর নজরদারি ছাড়া এ নির্দেশনা কার্যকর করা সহজ হবে না।

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪