
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার পুলিশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপারকে আটক করেছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে এ হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। লোহাগাড়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আলিম জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং ড্রাইভার ও হেলপারকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এএসআই মো. আলিম বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আটককৃতদের পরিচয় যাচাইসহ বিস্তারিত তদন্ত এবং আইনি প্রক্রিয়া চলছে।”
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের নিহত আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজায় অংশ নেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। পরে তারা আইনজীবী আলিফের কবর জিয়ারত শেষে ঢাকায় ফেরার পথে এ হত্যাচেষ্টার শিকার হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. তরিকুল ইসলাম জানান, “আমাদের আন্দোলনের দুই প্রধান সংগঠককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যার প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে নগরের টাইগারপাস মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। সমাবেশে তারা ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধের দাবি জানান। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমার ভাই সাইফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ইসকন একটি উগ্রবাদী সংগঠন, যা ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের শান্তি নষ্ট করতে চায়। আমরা এ ধরনের অপতৎপরতা কোনোভাবেই মেনে নেব না। ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভরতদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় যৌথবাহিনী রাতভর অভিযান চালিয়ে ৩০ জনকে আটক করেছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রতি বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। লোহাগাড়া থানা পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাটি নিয়ে যৌথভাবে কাজ করছে। আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড এবং হাসনাত-সারজিসের ওপর হামলা নিয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।