রোম থেকে আসা বিমানে বোমার হুমকি, তল্লাশিতে কিছুই পাওয়া যায়নি
রোম থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা ফ্লাইটে বোমার হুমকির পর তল্লাশি চালিয়ে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। যাত্রী ও ক্রুরা নিরাপদে অবতরণ করেছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তিনি উল্লেখ করেন, সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই তাদের উদ্দেশ্য। এ নিয়ে তিনি কোনো পক্ষপাতিত্ব করেননি বলে জানান।
আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, সেই প্রসঙ্গে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই বিষয়ে বিএনপির মতামত ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে এবং তাদের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, "আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। বিএনপি ইতোমধ্যেই বলে দিয়েছে, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে। তাদের এই মতামতকে আমরা অগ্রাহ্য করতে পারি না।" তিনি আরও বলেন, "কোনো একটি দল বা আরেকটি দলকে বেছে নেওয়ার জন্য আমি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। আমি রাজনীতিকদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করছি।"
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস অর্থনৈতিক খাতের সংকট এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। খেলাপি ঋণসহ আর্থিক খাতের নানামুখী সমস্যার সমাধানে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার যে বিভিন্ন সংস্কারমুখী উদ্যোগ নিয়েছে, তা সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারত সরকারের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "এ ধরনের অভিযোগ বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। যারা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং এসব ভিত্তিহীন অভিযোগের পেছনে কারা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।"
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার প্রথম কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলে ড. ইউনূস বলেন, "প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। আমি তাকে স্পষ্ট করে জানাই, এ ধরনের অভিযোগ অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়।"
৫ আগস্টের ঘটনায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব পড়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতা উদ্যাপন ভারতের জন্যও একটি ইতিবাচক বিষয় হওয়া উচিত। আমাদের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে ভারতের আরও সুসম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন।" তিনি মনে করেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের পারস্পরিক সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত করার সুযোগ রয়েছে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসা এবং তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন এবং তিনি মানুষকে বিক্ষোভে অংশগ্রহণে উস্কানি দিচ্ছেন। এর ফলে দেশের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে এবং ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। তবে ভারত সরকারকে এ বিষয়ে সরাসরি অনুরোধ করা হয়নি বলে জানান তিনি।
মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, "আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছি। কোনো সাংবাদিককে হয়রানি করার জন্য আমাদের সরকার আইন প্রয়োগ করেনি। তবে কিছু অ্যাক্রিডিটেশন বাতিলের ঘটনা ঘটেছে, যা আইন অনুযায়ী করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তুলনামূলকভাবে বিচার করলে দেখা যাবে, আমাদের সরকার এসব বিষয়ে অনেকটাই স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে।"
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ নিরপেক্ষ এবং মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। "আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা অধিকারকর্মী, যারা মানবাধিকার রক্ষায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। এখানে কোনো ইসলামপন্থী এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রশ্নই ওঠে না," বলেন তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা, অর্থনৈতিক সংস্কার, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে তার স্পষ্ট বক্তব্য উঠে এসেছে। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অবস্থান তুলে ধরে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
প্রভাত সময় ২৪
রোম থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা ফ্লাইটে বোমার হুমকির পর তল্লাশি চালিয়ে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। যাত্রী ও ক্রুরা নিরাপদে অবতরণ করেছেন।
বোমা হামলার হুমকি পাওয়া রোম থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৫৬ ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তল্লাশি চালাচ্ছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
পাকিস্তান সফর শেষে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশের ৬ সদস্যের সামরিক প্রতিনিধিদল। লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসানের নেতৃত্বে দলটি ১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সফর করে। সফরে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর পেশাগত ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।