• 23 Jan, 2025

ওয়াশরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় কবি হেলাল হাফিজকে

ওয়াশরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় কবি হেলাল হাফিজকে

কবি হেলাল হাফিজকে শাহবাগের একটি হোস্টেলের ওয়াশরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাংলা সাহিত্যের এই ক্ষতি অপূরণীয়।

বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম কবি হেলাল হাফিজ রাজধানীর শাহবাগের একটি হোস্টেলে ওয়াশরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যান। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ওই হোস্টেলের কমন ওয়াশরুমে দুর্ঘটনার পরপরই তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খলিল মনসুর জানিয়েছেন, কবি হেলাল হাফিজ হোস্টেলের একটি কক্ষে থাকতেন। দুপুরে তিনি কমন ওয়াশরুমে ঢোকেন, কিন্তু অনেকক্ষণ পরও বের না হওয়ায় অন্য সদস্যরা তাকে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখতে পান কবি ফ্লোরে পড়ে আছেন, তার মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, স্ট্রোক বা শারীরিক জটিলতার কারণে তিনি বেসিনে আঘাত পান। দুর্ঘটনায় বেসিন ভেঙে তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে।

১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণার বারহাট্টায় জন্ম নেওয়া হেলাল হাফিজ বাংলা কবিতার ভুবনে নিজস্ব ধারা তৈরি করেন। ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে তার লেখালেখির সূচনা হলেও, প্রথম কাব্যগ্রন্থ “যে জলে আগুন জ্বলে” প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে। এই গ্রন্থটি তাকে বাংলা সাহিত্যের শীর্ষ সারির কবিদের মধ্যে স্থাপন করে। দীর্ঘ ২৬ বছর পর ২০১২ সালে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “কবিতা একাত্তর” প্রকাশিত হয়। ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় তার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ “বেদনাকে বলেছি কেঁদো না”

উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় তার লেখা কবিতা “নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়” এর পঙ্‌ক্তি—“এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়”—স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পর্যন্ত প্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত।

কবিতায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। সাহিত্যে তার এই অপূরণীয় শূন্যতার ক্ষতি কোনোভাবেই পূরণীয় নয়।

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪