রোম থেকে আসা বিমানে বোমার হুমকি, তল্লাশিতে কিছুই পাওয়া যায়নি
রোম থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা ফ্লাইটে বোমার হুমকির পর তল্লাশি চালিয়ে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। যাত্রী ও ক্রুরা নিরাপদে অবতরণ করেছেন।
রাজশাহী-৬ আসনের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সম্পদ দখল, রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় রাজনীতিতে নিজের প্রভাব খাটিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ও বিরোধী দলের উপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমপি হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশাল সম্পদ গড়ে তোলারও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের চারবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, যিনি একসময় শুধুমাত্র একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, বর্তমানে স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী এবং বিতর্কিত এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। দলের নেতা-কর্মী, স্থানীয় প্রশাসন, এমনকি বিরোধী দলগুলোর নেতারাও তাঁর ক্ষমতা ও বিতর্কের প্রভাবের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
শুরু থেকে রাজনৈতিক উত্থান
২০০৮ সালে রাজশাহী-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই রাজনীতিতে শাহরিয়ার আলমের উত্থান ঘটে। আওয়ামী লীগ মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাট উপজেলায় বিভিন্ন ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেন এবং স্থানীয় নেতাদের বাদ দিয়ে নিজস্ব প্রভাব বলয় তৈরি করতে থাকেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে তাঁর শিল্পপ্রতিষ্ঠান ছিল ১৯টি, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২৫টিতে। এরপর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর ক্ষমতা ও দাপট আরও বেড়ে যায়।
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কখনো সরাসরি কোনো পদে না থাকা সত্ত্বেও শাহরিয়ার আলম তাঁর প্রভাব খাটিয়ে দলীয় কমিটিতে নিজস্ব অনুসারীদের স্থান দেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর প্রভাব বিস্তার ও কমিটিতে নিজের লোক আনতে গিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে বিভেদ সৃষ্টি করেন। বিশেষ করে, ২০১৪ সালের পর থেকে বাঘা ও চারঘাট উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের কমিটিতে নিজের লোকজনকে বসিয়ে তিনি দলীয় নিয়ন্ত্রণ আরও সুদৃঢ় করেন। এ কারণে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও দুঃখ বাড়তে থাকে।
স্থানীয় দলিল লেখক সমিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, বাঘা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে তাঁর সমর্থিত দলিল লেখক সমিতি কমিটির মাধ্যমে মাসে অর্ধকোটি টাকারও বেশি চাঁদা তোলা হতো, যার একটি বড় অংশ তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন। ২০২৩ সালে দলিল লেখক সমিতির এই চাঁদাবাজির বিরোধে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের নেতা আশরাফুল ইসলাম নিহত হন।
বিরোধী দলের উপর চাপ এবং মামলা
শাহরিয়ার আলমের সময়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা তাঁদের কার্যক্রম চালাতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা আবু সাঈদ। তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ৮০টির মতো মামলা দেওয়া হয়েছে, যার ফলে তিনি প্রায় সাত বছর কারাভোগ করেন। এ বিষয়ে সাঈদ বলেন, ‘আমাদের এলাকায় শাহরিয়ার আলম শান্তিতে থাকতে দেননি এবং রাজনীতি করার কোনো স্বাধীনতা ছিল না। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সদস্যরাই রাজনীতি করতে পেরেছে।’
সম্পদ বৃদ্ধি ও বিতর্কিত সম্পত্তির মালিকানা
একজন ব্যবসায়ী থেকে প্রতিমন্ত্রী হয়ে শাহরিয়ার আলম বিভিন্ন সম্পদ অর্জন করেছেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জমি, কারখানা ও খামার তৈরি করেন তিনি। তাঁর অন্যতম প্রতিষ্ঠান নর্থবেঙ্গল অ্যাগ্রো ফার্মস লিমিটেডের খামার রয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে, যেখানে প্রায় ৪০ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটে আরও জমি কেনা হয়েছে, যেখানে খামার গড়ে তোলা হয়েছে।
ঢাকার গুলশানে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট এবং রাজশাহীতে গড়ে তুলেছেন বারিন্দ মেডিকেল কলেজ। তাঁর মালিকানাধীন রেনেসাঁ গ্রুপের অধীনে পরিচালিত ‘দুরন্ত টেলিভিশন’ চ্যানেলের মাধ্যমেও ব্যবসায়িক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এছাড়া একজন পেট্রল পাম্প মালিক অভিযোগ করেন, তাঁর জমি ক্রয়ের সময় প্রভাব খাটিয়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা কম দিয়েছেন শাহরিয়ার আলম।
আত্মগোপন ও তদন্তের মুখোমুখি
সরকার পতনের পর থেকে শাহরিয়ার আলম আত্মগোপনে আছেন এবং তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব যাচাই-বাছাই করার জন্য বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) চিঠি পাঠিয়েছে। ভুক্তভোগী নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষরা তাঁর বিরুদ্ধে দাখিলকৃত অভিযোগগুলো তদন্ত করার দাবি তুলেছেন। অনেকে মনে করেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, দলীয় প্রভাব খাটানো ও সম্পদ অর্জনের ঘটনাগুলো তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে প্রভাবশালী হয়ে উঠলেও বর্তমানে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন শাহরিয়ার আলম। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও তিনি বর্তমানে আত্মগোপনে থাকায় সরাসরি কোনো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রভাত সময় ২৪
রোম থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা ফ্লাইটে বোমার হুমকির পর তল্লাশি চালিয়ে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। যাত্রী ও ক্রুরা নিরাপদে অবতরণ করেছেন।
বোমা হামলার হুমকি পাওয়া রোম থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৫৬ ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তল্লাশি চালাচ্ছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
পাকিস্তান সফর শেষে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশের ৬ সদস্যের সামরিক প্রতিনিধিদল। লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসানের নেতৃত্বে দলটি ১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সফর করে। সফরে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর পেশাগত ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।