ক্ষমতায় আসতেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নালিশ, পানামার প্রতিবাদ
৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পানামা খাল নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে জাতিসংঘে নালিশ জানিয়েছে পানামা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হলে প্রথম দিনেই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে গণপ্রত্যাবাসন কর্মসূচি, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল, ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় অভিযুক্তদের সাধারণ ক্ষমা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধান, শুল্ক আরোপ, এবং জ্বালানি খাত উন্নয়ন। এসব পদক্ষেপ মার্কিন অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম দিনেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ জারি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই পদক্ষেপগুলো তার নির্বাচনী প্রচারণায় বারবার উল্লেখ করা হয়েছে, যা মার্কিন অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্প অভিবাসন নীতিকে তার প্রথম দিনের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, "মার্কিন ইতিহাসের বৃহত্তম গণপ্রত্যাবাসন কর্মসূচি শুরু করব।" অপরাধী অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, প্রথম দিন থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হবে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এটি বাস্তবায়ন করা যেমন জটিল, তেমনি এটি মানবিক দিক থেকেও বিতর্কিত।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুসারে স্বীকৃত। ট্রাম্প বলেছেন, "প্রথম দিনেই আমি এই অধিকার বাতিল করব।" তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধান সংশোধন একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া, যা ট্রাম্পের জন্য সহজ হবে না।
৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিল হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ৯ মিনিটের মধ্যেই তিনি এ বিষয়ে কাজ শুরু করবেন। সমালোচকরা মনে করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করতে পারে এবং এটি আরও বিতর্কের জন্ম দেবে।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তার মতে, পুতিন এবং জেলেনস্কির সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক আছে, যা বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের এই প্রতিশ্রুতিকে অবাস্তব এবং কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য জটিল বলে অভিহিত করেছেন।
ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, মেক্সিকো এবং কানাডার আমদানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। তার মতে, এটি মার্কিন শিল্পকে শক্তিশালী করবে। তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ মার্কিন অভ্যন্তরীণ বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং ভোক্তাদের জন্য খরচ বাড়িয়ে দেবে।
ট্রাম্প আরও বেশি তেল ও জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার মতে, "জ্বালানি খরচ কমাতে আমেরিকাকে নিজের সম্পদ ব্যবহার করতে হবে।" তবে পরিবেশবাদীরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ জলবায়ু সংকটকে আরও তীব্র করবে এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
ট্রান্সজেন্ডার নারীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ এবং লিঙ্গ পরিচয় নিশ্চিতকরণ নীতিমালা বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্ত এলজিবিটিকিউ প্লাস সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মার্কিন গাড়ি শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। তার ভাষায়, "আমেরিকার অটোমোবাইল শিল্প আবার শীর্ষস্থানে যাবে।" এ উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি ‘মেড-ইন-আমেরিকা’ ধারণাকে সামনে রেখে দেশের শিল্পখাতকে আরও এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাগুলো উচ্চাভিলাসী হলেও বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না। এগুলোর অনেকগুলোই আইনি জটিলতা এবং রাজনৈতিক বাধার সম্মুখীন হতে পারে। বিশেষ করে অভিবাসন নীতি, সংবিধান সংশোধন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো বিষয়গুলোতে ব্যাপক বিতর্ক এবং সমালোচনার সৃষ্টি হবে।
ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। তবে এগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে এখনও বড় ধরনের সংশয় রয়ে গেছে। তার এসব পদক্ষেপের ফলে মার্কিন রাজনীতি, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কোন দিকে এগোবে, তা সময়ই বলে দেবে।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
প্রভাত সময় ২৪
৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পানামা খাল নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে জাতিসংঘে নালিশ জানিয়েছে পানামা।
গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিনে জাতিসংঘ জানিয়েছে, সোমবার এক দিনে ৯১৫টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। এই সংখ্যা দৈনিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া ১৬ লাখ ভারতীয় নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন।