বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম অভিযোগ করেছেন, বিগত ১৬ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পুলিশকে একক কর্তৃত্বে “টিস্যুর মতো” ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, জোরপূর্বক গুম, ক্রসফায়ার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু ঘটনার জন্য পুলিশকে ব্যবহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। অরাজনৈতিক সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের শাস্তি দাবি করা হয়।
সমাবেশে বক্তৃতা
সারজিস আলম বলেন, “বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা যেভাবে পুলিশকে ব্যবহার করেছেন, তাতে দেশের সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মানুষকে বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে গ্রেফতার, খুন এবং গুম করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নামার চেষ্টা করলেও কোনো দলই এককভাবে সফল হতে পারেনি। তবে বর্তমানে জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মায়ের ডাক সংগঠনের আহ্বায়ক শারমিন ইসলাম। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ অন্যান্য নেতারা।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আওয়াজ
‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর গণহত্যা, এবং জুলাই গণহত্যার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিচার দাবি জানানোই এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তারা বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।