• 11 Mar, 2025

সালাহউদ্দিন ছাড়া সকল উপদেষ্টা অপদার্থ- মিনু

সালাহউদ্দিন ছাড়া সকল উপদেষ্টা অপদার্থ- মিনু

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, আজ কৃষক সার কিনতে পারছে না। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। সবকিছু সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাহিরে। অথচ আপনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না। কাজেই উপদেষ্টা ডক্টর সালাহউদ্দিন ছাড়া আপনার সব উপদেষ্টারা অপদার্থ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে নওগাঁ জেলা শহরের নওযোয়ান মাঠে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন মিজানুর রহমান মিনু।

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙখলা পরিস্থিতির উন্নতির, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে নওগাঁ জেলা বিএনপি এ জনসভার আয়োজন করে।

এর আগে জেলার ১৪ টি ইউনিট থেকে মিছিল নিয়ে নেতা কর্মিরা মাঠে উপস্থিত হোন। জানান দেন তাদের নেতাকর্মীর সংখ্যা।

নওগাঁ জেলাবাসীর উদ্দেশ্যে মিজানুর রহমান মেনু বলেন, নওগাঁ হল সেই মাটি যেখানে গত ১৭ বছর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করেছে। নওগাঁর মাটি বিএনপির ঘাঁটি, তারেক রহমানের ঘাঁটি। এই নওগাঁর মাটিতে ম্যাডাম খালেদা জিয়া ৫ দিন থেকে রাজনীতির খোঁজ নিয়েছেন। সেই জন্য আমি গর্ববোধ করি আমার মা এখানে এসেছিলেন। তাই নওগাঁর এ সমাবেশ বাংলাদেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। তারেক রহমানের দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশের মাটিতে খুনি হাসিনার কোনদিন স্থান হবে না জানিয়ে মিনু অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা আপনাদের সমর্থন দিয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা জনগণের বিশ্বাস অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ৩৩ জনকে ওসডি করেছেন। আপনারা তিন হাজার ৩০০জনকে ওসডি করুন।

অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের উদ্দেশ্যে মিনু আরো বলেন,

প্রফেসর ইউনুস আপনি যখন নোবেল বিজয়ী হয়ে এদেশে এসেছিলেন, তখন আপনার কি হয়েছিল নিশ্চয়ই মনে আছে? কিন্তু ম্যাডাম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা আপনাকে পুষ্পস্তবক দিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, ছয় মাস আগেও আপনার দেশ বিদেশে সুনাম ছিল। কিন্তু এখন আপনার এই সুনাম আছে কিনা যাচাই করে দেখবেন। আপনি ছয় মাস আগে যে জায়গায় ছিলেন এখন আর সে জায়গায় নেই আপনি।

এদেশের মানুষ শুধু খালেদা জিয়াকে চেনে তারেক রহমান কে চিনে এবং ধানের শীষ কে চিনে। তাই দ্রুত সংস্কার করে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিন। এক্ষেত্রে আমরা আপনাদেরকে সহযোগিতা করব।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নুর সভাপতিত্বে সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, জনাব এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সমবায় সম্পাদক নজমুল হক সনি, নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম টুকু, এসএম রেজাউল ইসলাম রেজু, আমিনুল হক বেলাল, মামুনুর রহমান রিপন, শফিউল আজম রানা প্রমুখ।

এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে আগুন ঝড়া বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল, নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, পোরশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোজাম্মেল চৌধুরী, রাণীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এছাহক আলীসহ অন্যান্য উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতা।

এ সময় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল,ছাত্রদল, শ্রমিক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, কৃষক দল, মহিলা দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস ও ওলামা দলের জেলা - উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ বক্তা হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন বলেন, কৃষক দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। গত ১৭টি বছর শেখ হাসিনার যেমন জবাবদিহিতা ছিল না, ঠিক তেমনি এই সরকারেরও জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নেই। ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেলেও এখনো গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। তাই দ্রুত নির্বাচনের রোড মাপ দিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিন যাতে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়।

তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, বিএনপিকে নিয়ে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আপনারা ১৭ বছর ধর্য ধরেছেন। আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন। জনগণের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেওয়া বি এন পির ৩১ দফা বোঝাতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে সততার বাংলাদেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ।

আমরা ও সংস্কার চাই কিন্তু আপনাদের কার্যকলাপে সেটা মনে হচ্ছে না। আমরা শেখ হাসিনাকে ভয় পাইনি। আপনাদেরও ভয় পাই না।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, এই সরকারকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। কিন্তু ক্ষমতায় থেকে আরেকটি দল গঠনের অনুমতি বিএনপি দিবেনা। বিএনপির শিকড় অনেক গভীরে। প্রতিটি জনগণের ভিতরে। ক্ষমতার ওজন অনেক বেশি, তোমরা ছোট এই ভাড় সহ্য করতে পারবেনা। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তার দোসররা এখনও অশান্তি করছে। স্বৈরাচারী সরকার হিসেবে শেখ হাসিনার নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে।

তারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে শুরু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী নেতা কারা, নাগরিক কমিটির নেতা কারা, সরকারে আছে কারা। ছোট ছেলেরা যারা মব শুরু করেছে,, এটা খুব খারাপ। আমার দেখেছি কম্বল দিতে প্লেনে যায়। তবে তারা সকলেই শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়ে দ্রুত নির্বাচন দাবি করেন। সরকারকে দ্রুত রোডম্যাপ দিতে হবে বলে হুশিয়ারী দেন। দেশ স্বাধীন হয়েছে, কেউ কেউ মনে করছে আমরা ক্ষমতায় গিয়েছি। বক্তারা সকলেই বলেন আর একটা আন্দোলনের জন প্রস্তুত থাকতে হবে।