• 23 Jan, 2025

তিন দিনে ছিনতাইকারীর হাতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু: উদ্বেগে নাগরিক নিরাপত্তা

তিন দিনে ছিনতাইকারীর হাতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু: উদ্বেগে নাগরিক নিরাপত্তা

তিন দিনের ব্যবধানে ছিনতাইকারীদের হাতে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। টহল বাড়ানোসহ কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন নাগরিকরা।

রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে, ১২ এবং ১৪ ডিসেম্বর, ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

১২ ডিসেম্বর সকালে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সীমান্ত ঘোষ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এর আগে একই দিনে ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী তাজবির হোসেন শিহান (২৬) দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তিনি মৌচাক জামতলা এলাকার বাসিন্দা এবং উত্তরার একটি কল সেন্টারে কর্মরত ছিলেন।

তাজবিরের মৃত্যুতে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন এবং চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রদান, নিহত শিহানকে নিয়ে একটি ফিচার প্রকাশ, পুলিশের দুঃখ প্রকাশ এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার।

নাগরিক নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ

এই হত্যাগুলোর পেছনে অপরাধ চক্রের দুঃসাহস ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা দায়ী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলের অভাব এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি এসব অপরাধ বাড়িয়ে তুলছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উদ্যোগ

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি জানান, শেষ রাত ও সকালের দিকে ছিনতাই বেশি হয়। এজন্য পুলিশকে টহল বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় করে ছিনতাই শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, "নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।"

উদ্বেগ ও প্রত্যাশা

ভুক্তভোগীদের পরিবার ও সাধারণ মানুষ দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। নাগরিকরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও জোরদার নজরদারি ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪