• 22 May, 2025

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ। ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আইআরআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, নির্বাচন কমিশন গঠন ও সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। আইআরআই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করে গণতন্ত্র

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়। গণতন্ত্রের অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে তিনি এ সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। বুধবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে কাজ করবে।" তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতাদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তাঁর মতে, এই সফর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের অগ্রগতির সঠিক চিত্র তুলে ধরবে। আইআরআই হলো যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি থিঙ্কট্যাংক। এটি বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র প্রসারের জন্য কাজ করে। আইআরআইয়ের আঞ্চলিক প্রধান স্টিভ চিমার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। চিমা বলেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আমেরিকার জন্যও প্রাসঙ্গিক।” তিনি আরও বলেন, "দেশের মূল প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনের উদ্যোগে সহযোগিতা করা আইআরআইয়ের অগ্রাধিকার।" বৈঠকে চিমার সঙ্গী ছিলেন আইআরআই কর্মকর্তা জিওফ্রে ম্যাকডোনাল্ড ও কান্ট্রি চিফ জোশুয়া রোসেম্বলাম।

ড. ইউনূস জানান, বাংলাদেশে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজ চলছে, যা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য মাঠ প্রস্তুত করবে। তিনি বলেন, “নির্বাচনের ট্রেন ইতিমধ্যেই প্রথম স্টেশন ছেড়েছে। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছি।” তিনি ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেন এবং এটিকে গণতন্ত্রের জন্য এক নতুন দিগন্ত বলে অভিহিত করেন। বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, এবং প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

ড. ইউনূস বলেন, “আমরা দেশের ভেতরে এবং বাইরে থেকে প্রাসঙ্গিক সমর্থন পেতে আশাবাদী। গণতন্ত্র, শান্তি এবং উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।” বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক উন্নয়নের এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকটি আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক প্রচেষ্টার গুরুত্বকে তুলে ধরেছে।

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪