বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রখ্যাত লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, লন্ডনের একটি ক্লিনিকে খালেদা জিয়া ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক জানান, হাসপাতালে ভর্তির পরপরই খালেদা জিয়ার বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসক দল তার প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) থেকে বিস্তারিত চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি আরও জানান, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলেও মানসিকভাবে যথেষ্ট দৃঢ়। বিমানবন্দর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে না উঠে ছেলে তারেক রহমানের গাড়িতে করেই হাসপাতালে যান তিনি। দেশবাসীর উদ্দেশে দোয়া কামনা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ৫৮ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান বড় ছেলে তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান। এছাড়া যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলী খান ফুল দিয়ে বরণ করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। এর আগে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে খালেদা জিয়ার বিশেষ ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে দোহা হয়ে লন্ডনে পৌঁছায়।
খালেদা জিয়া সর্বশেষ ২০১৭ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্য সফর করেছিলেন। এরপর পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার আর কোনো বিদেশ সফর হয়নি। এ সময়ের মধ্যে তিনি ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গেও সরাসরি দেখা করতে পারেননি। উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার দাবিতে বিএনপি সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট নির্বাহী আদেশে তার মুক্তি মেলে। এরপরই তার বিদেশ যাত্রার পথ সুগম হয়। ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুসের জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন।