• 23 Jan, 2025

বিলাসবহুল জিপ কেনায় অনিয়মের অভিযোগে আলোচনায় জ্বালানি খাতের তিন কোম্পানি

বিলাসবহুল জিপ কেনায় অনিয়মের অভিযোগে আলোচনায় জ্বালানি খাতের তিন কোম্পানি

আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে জ্বালানি খাতের তিনটি কোম্পানি ব্যতিক্রমী অনুমোদনে বিলাসবহুল জিপ কেনে, যা সরকারি নিয়মের বাইরে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকার এই কেনাকাটায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ক্রয়নীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিষয়টি এখন অন্তর্বর্তী সরকারের তদন্তাধীন।

আওয়ামী লীগ সরকারের শেষের দিকে জ্বালানি খাতের অধীন তিনটি কোম্পানি ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিলাসবহুল তিনটি জিপ গাড়ি কেনায় অনুমোদন দেয়, যা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) এবং তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। প্রতিটি গাড়ির জন্য পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, যা সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গ্রেড-১ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার নির্ধারিত দামের অনেক বেশি।

জানা গেছে, এসব বিলাসবহুল জিপ কেনার প্রস্তাবটি কোম্পানিগুলোর বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয় এবং এরপর সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড থেকে গাড়ি কেনা হয়, যদিও ডকইয়ার্ডটি গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নয়। একটি বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে এসব গাড়ি সরবরাহ করা হয়েছে। বিজিএফসিএল ২৭০০ সিসির টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো কেনে, যা সরবরাহ নেওয়া হয় ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। অন্যদিকে, বাপেক্স এবং তিতাস গ্যাসেও বিলাসী গাড়ি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তবে সরকারের পতনের পর, তিতাস গাড়ি কেনার প্রক্রিয়া স্থগিত করে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০২৩ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ি কেনার সর্বোচ্চ অনুমোদিত দাম ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু জ্বালানি খাতের এই তিনটি কোম্পানির অনুমোদন অনুযায়ী, এই তিন গাড়ির বরাদ্দ ছিল প্রায় ১৫ কোটি টাকা, যা সাধারণ ক্রয়নীতির পরিপন্থী।

প্রকল্প খাতে বেশি দামে গাড়ি কেনার প্রবণতা নিয়ে জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ রয়েছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম এই ঘটনাকে সরকারি নির্দেশনার লঙ্ঘন এবং বোর্ডের ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি জানান, "সরকারি সব নির্দেশনা মানতে বাধ্য হলেও কোম্পানির বোর্ড ব্যক্তিস্বার্থে অপব্যবহার করেছে।"

তবে এ বিষয়ে কোনো পরিস্কার বক্তব্য পাওয়া যায়নি সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছ থেকে। তার আত্মগোপনের কারণে তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে গাড়ি কেনার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে।

বর্তমান সরকার নিশ্চিত করতে চায়, কোনো অনিয়ম যেন না হয় এবং সরকারি সংস্থাগুলোর যথাযথ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়।

 

 

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪