নওগাঁয় গত ৪ দিন ধরে কুয়াশা কমলেও কনকনে শীতে জনজীবনে বাড়ছে ভোগান্তি। দিনের বেলা বইতে থাকা হিমেল হাওয়ার কারণে চরম শীতকষ্টে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক ও রিকশা ভ্যান চালকরা। দিনমজুরদের আয় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ব্যাহত হচ্ছে চলতি মৌসুমের ইরিবোরো চাষাবাদ। প্রভাব পড়েছে ইরিবোরো বীজতলায়। শীতের কারণে বাড়ছে ডায়রিয়া, আমাশয়, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগ।
নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আনছার আলী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন নতুন শিশু রোগীসহ বর্তমানে ৫২ জন শিশুরোগী ডায়রিয়া, আমাশয়, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন বিভিন্ন বয়সী মানুষ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তিনি শিশু ও বয়স্কদের তীব্র শীতের কারণে গরম কাপড়ে মুড়িয়ে রাখার এবং ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
নওগাঁ শহরের রিকশা চালক শরিফুল ইসলাম জানান, শীতে রিকশা চালানো কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। তীব্র কনকনে শীতে হাত-পা কাজ করতে চায় না। এছাড়া শহরে লোকজন কম যাওয়ায় আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। শহরতলীর বরুণকান্দির কৃষক ফিরোজ আহমেদ বলেন, এখন ইরিবোরো চাষাবাদের সময়, কিন্তু তীব্র শীতের কারণে কৃষি শ্রমিকরা মাঠে কাজ করতে পারছেন না। এর ফলে ইরিবোরো চাষাবাদ কিছুটা বিলম্বিত হয়ে পড়ছে। বাইপাস সড়কের চা দোকানি তারেক বলেন, প্রতিদিন ৫’শ থেকে ৬’শ কাপ চা বেচতেন তিনি। কিন্তু শীতের দাপটে লোকজন বাইরে আসছেন না। ফলে চা বিক্রি অর্ধেকে চলে এসেছে।
নওগাঁর বদলগাছি আবহাওয়া অফিসে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ১০.০৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল বাতাসের কারণে জেলায় সারাদিনই শীত অনুভূত হওয়ায় শীতকষ্ট পোহাচ্ছেন জেলার শহর ও গ্রামীণ জনপদের মানুষজন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীত কিছুটা কমলেও বিকেলের দিকে আবারও শীত অনুভূত হতে শুরু করে।
নওগাঁ বদলগাছি আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্রা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আজ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ১০.০৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল বাতাসের কারণে তাপমাত্রা আরও কিছুটা নিচে নামতে পারে বলেও জানান তিনি।