বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণহত্যার অভিযোগে বিচার করতে হবে। তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে আইন অনুযায়ী কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। হাসনাত বলেন, "শেখ হাসিনা ভারতের বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিলেন। ক্ষমতায় থাকার সময় দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে প্রয়োজনে দেশকে বিক্রি করতে দ্বিধা করতেন না। তিনি মনে করতেন, তার বিকল্প কেউ নেই। কিন্তু জনগণের ঐক্য তার সেই ভ্রান্ত ধারণাকে ভেঙে দিয়েছে। গণহত্যার অপরাধে তাকে বিচার করা হবে, এবং এ জন্য তাকে দেশে ফেরত আনা হবে।"
ভারতের সমালোচনা
সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, তারা একটি জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তাদের নীলডাউন পলিসির কারণে প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গে ভারতের সখ্য নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারতের সঙ্গে করা চুক্তিগুলো প্রকাশ করতে হবে। এখন থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক হবে সমতার ভিত্তিতে, চোখে চোখ রেখে।” তিনি আরও বলেন, "১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর ভারতের সবচেয়ে বড় পরাজয় হলো ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে তাদের স্বার্থবিরোধী শক্তির উৎখাত। ভারত নিজেদের ‘হাউস অব টেরর’ এবং ‘হাউস অব মাফিয়া’তে পরিণত করেছে। তারা বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রমে সহযোগিতা দিচ্ছে। যদি ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তাহলে ভারতকে আমরা জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিবেচনা করব।"
প্রশাসনে সংস্কারের দাবি
প্রশাসনে থাকা ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসরদের বরখাস্তের দাবি জানিয়ে হাসনাত বলেন, "যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে না, তাদের পরিবর্তে বিকল্প ভাবতে আমরা দুবার চিন্তা করব না। যারা ৬২৬ জনকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।"
ছাত্র আন্দোলনের শক্তি
হাসনাত বলেন, "শেখ হাসিনার আমলে আমরা সবচেয়ে অনিরাপদ অবস্থায় ছিলাম। এখন আমাদের শক্তি জনগণ, ছাত্র-জনতা। আমরা ভীত নই। দাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নেমেছি। একজন আসিফ বা হাসনাত মারা গেলে লক্ষাধিক আসিফ, হাসনাত ও সারজিস রাস্তায় নামবে। যত বেশি আক্রমণ হবে, আমরা তত শক্তিশালী মনোবল নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব।"
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন, যা দেশের জনগণ আর মেনে নেবে না। সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আব্দুল্লাহ ভবিষ্যতে আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দেন। গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচার দাবি করে, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ভারতের সমালোচনা এবং প্রশাসনে সংস্কারের দাবি তুলেছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি দেশের জনগণ ও ছাত্র-জনতার ঐক্যের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।