• 22 May, 2025

নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামি গ্রেফতার

নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামি গ্রেফতার

নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করে তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পূর্ব শত্রুতা এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। তদন্তে সহায়তা করেছেন গ্রেফতারকৃতরা, এবং অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার এই তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, মহাদেবপুর থানাধীন রাইগা ইউনিয়নের কালনায় মৌজায় জনৈক আরমান সরদার এর জমির পাশে কালভার্টের নিচে পত্নীতলা থানার কোতালী গ্রামের মৃত অছিমুদ্দিনের ছেলেকে জাহিদুল ইসলাম (৪৫)কে গত ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে জবাই করে হত্যার পর ফেলে রেখে যায়। মৃতদেহটি একটি নীল পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ছিল।

এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী মোছাঃ নাসিমা খাতুন (৩৭) বাদী হয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর মহাদেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর থেকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে কোনো ধরনের ক্লু না থাকার কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো আসামি গ্রেফতার করতে পারছিলেন না। ফলে তদন্ত কাজে অত্যন্ত দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তা, মহাদেবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে নওগাঁ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে উক্ত টিম এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন পত্নীতলা উপজেলার কোতালী গ্রামের গুলজার হোসেনের ছেলে মামুনুর রশিদ (৩৬), মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে মোঃ রুবেল হোসেন (২৫), এবং আবুল কালাম আজাদের ছেলে মোহাম্মদ রাজু হাসান (৩২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। পূর্ব শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে মোট পাঁচজন জড়িত ছিল বলে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের মোড় ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে একটি অটো চার্জার ভ্যানে করে মহাদেবপুরে এনে গুমের চেষ্টা করা হয়েছিল। এছাড়া, আলামত ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি মহাদেবপুর থানাধীন চেরাগপুর ইউনিয়নের ধনজৈল গ্রামের মাঠের মধ্যে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর আসামিরা ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধারসহ দাফন-কাফন কাজে সক্রিয়ভাবে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছে যেন তাদেরকে কেউ সন্দেহ না করে। উল্লেখ্য, মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুরে স্থানান্তরের কাজে ব্যবহৃত অটো চার্জার ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার।