• 23 Jan, 2025

ভারতের মিথ্যাচার আর স্বার্থরক্ষার পেছনে শেখ হাসিনা: রিজভী

ভারতের মিথ্যাচার আর স্বার্থরক্ষার পেছনে শেখ হাসিনা: রিজভী

ভারত নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে, কিন্তু প্রযুক্তির যুগে তারা সফল হচ্ছে না। গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার জন্য ভারতের এই মায়াকান্না আসলে তাদের স্বার্থরক্ষার কৌশল।

ভারত শেখ হাসিনার মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কুমিরের মায়াকান্না করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন গণ-অভ্যুত্থানের আহত ব্যক্তিদের দেখতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, ভারত মিথ্যার বেড়াজাল তৈরি করে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাকে দিয়ে ভারত নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে, সেই স্বার্থ রক্ষার জন্যই তারা শেখ হাসিনার জন্য কুমিরের মায়াকান্না করছে। তারা মিথ্যার প্রচারণা চালিয়ে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে চাইলেও প্রযুক্তির এই যুগে তা আর সম্ভব হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি পোড়ানো ও তাদের উপর নির্যাতনের মতো মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ভারত যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা জনগণ গ্রহণ করছে না। প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে এসব ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচারণা টিকছে না। বরং এ ধরনের অপপ্রচার তাদের আসল উদ্দেশ্য উন্মোচিত করছে।” রিজভী বলেন, “যে ভারতকে আমরা গণতন্ত্রের রক্ষক হিসেবে জানতাম, আজ তারা শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালাতে সাহায্য করছে। বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের নীতিনির্ধারকেরা কুমিরের মায়াকান্না করছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই তারা নিজের স্বার্থে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “আজ আমরা দেখছি, ভারত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হেনে এমন কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। আমাদের কূটনৈতিক মিশনে আক্রমণ করা হয়েছে, যা ভয়াবহ অপরাধ। এসব ঘটনা প্রমাণ করে, তারা আর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাস করে না।”

আন্দোলনের আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে রিজভী বলেন, “জাতীয় বার্ন ইউনিটে যে দৃশ্য দেখলাম, তা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। আহত ব্যক্তিদের দগদগে ক্ষত এবং শরীরের অবস্থা দেখে বোঝা যায়, সরকার কতটা নির্দয় আচরণ করেছে। সরকার ভীত হয়ে জনগণের ওপর সহিংস হামলা চালিয়েছে। এই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি শুধু সরকার নয়, ভারতীয় স্বার্থ-রক্ষাকারীরাও মদদ দিচ্ছে।” রিজভী আরও বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র। কোনো বহিরাগত শক্তি বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না। যারা দেশের জনগণের ওপর সহিংসতা চালিয়েছে, তাদের অবশ্যই বিচার হবে। শেখ হাসিনার মতো স্বৈরাচারী শাসককে ভারত যেভাবে সমর্থন দিচ্ছে, তা নিন্দনীয়।”

রিজভী অভিযোগ করেন, ভারত সব সময়ই বাংলাদেশকে তাদের স্বার্থ রক্ষার একটি ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাকে দিয়ে তারা এ দেশকে একটি দমনমূলক শাসনে আবদ্ধ করে রেখেছে। এর ফলে দেশের জনগণের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। অথচ তারা এ ঘটনাকে ভিন্নভাবে তুলে ধরে বিশ্ববাসীর কাছে নিজেদেরকে গণতন্ত্রের সমর্থক হিসেবে তুলে ধরতে চায়। এই স্বার্থপরতা বাংলাদেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।”

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, সদস্যসচিব মোক্ষেদুল মোমিন, উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিনসহ বিএনপির আরও নেতারা।রিজভী বলেন, “বাংলাদেশ রক্ত দিয়ে কেনা দেশ। এ দেশের জনগণ কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না। যারা অপরাধ করেছে এবং গণতন্ত্র দমন করেছে, তাদের অবশ্যই জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।”

নিউজ ডেস্ক

প্রভাত সময় ২৪