আগামী ২৫বৈশাখ (৮মে) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পতিসরে কবির স্মৃতি বিজড়িত কাচারী বাড়িতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। কাচারী বাড়ির চারপাশে বর্তমানে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। কবিগুরুর জন্ম দিন উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো কাচারীবাড়ি পতিসরের দেবেন্দ্র মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে তিনদিনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা, আবৃত্তি , ন,ত্য সঙ্গীত অনুষ্ঠান তিন দিনের গ্রামীন রবীন্দ্রনাথ মেলা। দেবেন্দ্র মঞ্চ রং করা, প্যান্ডেল স্থাপন, তোরণসহ অন্যান্য কাজগুলো শেষের পথে। এছাড়া পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানও অব্যাহত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান কবিগুরুর জন্ম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে এবার কেন্দ্রীয় ভাবে কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে না কাচারীবাড়ি পতিসরে। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতীয় ভাবে তিন দিনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথমে দিনে বরীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। এছাড়া দেবেন্দ্র মঞ্চে জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন সংস্কৃতিকমী ও স্থানীয় বরীন্দ্র গবেষকদের অংশগ্রহণে একটি মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা শেষে জেলা, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর নিয়মিত শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে বরীন্দ্র সংগীত ও নৃত্য।
এছাড়াও দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন জেলার বিভিন্ন স্থানের ও স্থানীয় বরীন্দ্র গবেষক ও বরীন্দ্র ভক্তদের মধ্য থেকে কারা রবীন্দ্র আলোচক হিসেবে আলোচনা করবেন । প্রতি বছরই বরীন্দ্র জন্ম দিনে পতিসরে বসে গ্রামীণ মেলা। তারই ধারাবাহিকতায় এবারো স্থানীয় একটি কলেজ মাঠে ঐতিহ্য হিসেবে তিনদিন স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন বরীন্দ্র মেলার আয়োজন করবে। যেখানে মাছের মেলা, জামাই মেলাসহ অন্যান্য গ্রামীন লোকজ সংস্কৃতির পসরা থাকবে। মেলায় শিশুদের জন্য থাকবে আকর্ষনীয় বিভিন্ন আয়োজন। থাকবে সাকার্স, মোটরসাইকেল খেলা, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন।
আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে রবীন্দ্র মেলা, বরীন্দ্র সংস্কৃতি চর্চা, বরীন্দ্র সংগীত, বরীন্দ্র কবিতা, বরীন্দ্র গবেষণা সবগুলো বিষয়কে নিয়ে একটি বার্তা এই অঞ্চলের মানুষদের কাছে পৌছে দিতে চাই। নওগাঁ সাংস্কৃতিক কমী ও প্রবীণ সাংবাদিক কায়েস উদ্দিন বলেন, কবি গুরু নওগাঁর এই পতিসবে তার নিজস্ব জমিদারির কাচারি বাড়িতে বসে ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাকে বাকে বৈশাথ মাসে যেথা হাটু জল থাকেসহ অসংখ্য গল্প,কবিতা ও কাব্য রচনা করেন।
রবীনন্দ্রনাথ ছিলেন একজন মানবিক কবি। তিনি নোবেল প্রাইজের টাকায় এই জনপদের দরিদ্র মানুষের কলানে কলের লাঙ্গল এনে তা দিয়ে চাষ শুরু করেন। এ ছাড়া এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্টান ও দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন।তিনি দরিদ্র প্রজাদের কল্যানে এখানে কৃষি ব্যাং ক স্থাপন করেন। স্থানীয় মুনিয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও রবীন্দ্র ভক্ত এস এম ফারুক বখত বলেন,এছাড়া বলেন, কবির জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে হাজারো রবীন্দ্র ভক্ত ও জামাই মেয়ে আত্মীয়-স্বজনের আগমনে প্রতিশোধ যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। তিনি কবির স্মৃতি সংরক্ষনে পতিসরে একটি কৃষি কলেজ, একটি হাসপাতাল ও একটি অডিটোরিয়াম স্থাপনের দাবি করেন। কবি গুরু প্রয়ানের চার বছর আগে সবশেষ পতিসরে আসেন ১৯৩৭ সালে।তিনি যাবার সময় তার জমিদারির প্রায় সব সম্পত্তি দান করে যান প্রজাদের মধ্যে।